Header Ads

জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুরাগী সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput)



সুশান্ত সিং রাজপুত বলিউডের সুবিশাল আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার অকাল আত্মহত্যা বিশ্বের কেউ ই মেনে নিতে পারছে না। তার অভিনয় জীবনে সাফল্যের পাশাপাশি পড়াশোনা তেও ছিলেন দুর্দান্ত। জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রতি ছিল তার অদম্য আগ্রহ। আজ তার  জীবনের এই অদেখা দিক নিয়েই কথা বলব। 

সুশান্ত ১৯৮৬ সালের ২১শে জানুয়ারি তারিখে ভারতের বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা ছিলেন সরকারি কর্মচারী। তাঁর পৈতৃক বাড়ি বিহারের পূর্ণিয়া জেলায়। তার এক বোন, মিতু সিং রাজ্য পর্যায়ের একজন ক্রিকেটার। ২০০২ সালে তার মায়ের মৃত্যু সুশান্তকে বিধ্বস্ত করে দেয় এবং একই বছর তিনি তার পরিবারের সাথে পাটনা থেকে নতুন দিল্লিতে চলে আসেন। সুশান্ত পাটনার সেন্ট কারেন উচ্চ বিদ্যালয় এবং দিল্লির কুলাচি হাঁসরাজ মডেল স্কুল হতে তার স্কুল জীবনের শিক্ষা সম্পন্ন করেছিলেন। 

সুশান্তের তথ্য মতে, তিনি ২০০৩ সালে ডিসিই প্রবেশিকা পরীক্ষায় সপ্তম স্থান অর্জন করেছিলেন[এরপর তিনি দিল্লি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হন।এছাড়াও তিনি পদার্থবিজ্ঞানে জাতীয় অলিম্পিয়াড বিজয়ীও ছিলেন।সর্বোপরি তিনি ভারতীয় খনি বিদ্যাপীঠের জন্য প্রায় ১১টি প্রকৌশল প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েছিলেন; যার সবগুলোতে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। মঞ্চ এবং নৃত্যে অংশগ্রহণ করার ফলে, তিনি তার পড়াশুনার জন্য খুব কমই সময় পেতেন, যার ফলস্বরূপ তিনি বেশ কয়েকটি ব্যাকব্লগের সম্মুখীন হয়েছিলেন, যার কারণে শেষ পর্যন্ত তাকে ডিসিই ছেড়ে দিতে হয়েছিল।] অভিনয়ের জীবনে প্রবেশ করার পূর্বে, তিনি তার চার বছরের কোর্সের শুধু তিন বছর পূর্ণ করেছিলেন। 

সুশান্তের ইনস্টাগ্রাম পোস্টগুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় মহাকাশের প্রতি তার প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। তিনি সৌরজগতের প্রতি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে তাঁর সংগ্রহে বিশ্বের সেরা দূরবীণগুলির একটি ছিল। যার মাধ্যমে তিনি শনির বলয় দেখতেন বলে বলেছিলেন।এছাড়াও এন্ড্রোমেডা গ্যালাক্সি নিরীক্ষণ করতেন তিনি। নিজের প্রিয় মহাকাশ জাগতিক দৃশ্য বাড়িতে বসেই দেখার জন্য অ্যাপার্টমেন্টের ব্যালকনির সামনে রেখেছিলেন তার এই দামী টেলিস্কোপ - মিড ১৪'' এলএক্স৬০০। তার পাশের ঘরেই রাখা ছিল নাসার মহাকাশযানের রেপ্লিকা। আর ঘরের দেওয়ালে টাঙানো স্পেসস্যুট পরা সুশান্তের ছবি।



সম্প্রতি শ্রদ্ধা কাপুর বলেছেন, “দারুণ একজন সহ অভিনেতার সঙ্গেই সুশান্ত অন্তর থেকে ছিল ভাল মানুষ। সে একবার নিজের টেলিস্কোপ দিয়ে আমাকে চাঁদ দেখিয়েছিল। আমি তোমাকে খুব মিস করব, প্রিয় সুশান্ত...।


সুশান্তের জীবনে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা ছিল ফ্লাইট সিমুলেটর। যা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাইলটদের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেটি কেনার পর সুশান্ত ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘#LovingMyDream ১/১৫০! ফ্লাইংয়ের লাইসেন্স পেয়েছি! এই অসামান্য সুন্দর (বোয়িং ৭৩৭ ফিক্সড বেস ফ্লাইট সিমুলেটরটা) কিনছি। নিজের ১৫০ টি স্বপ্নের মধ্যে ১মটিকে ভালোবাসা বা সেটার সঙ্গে বাঁচার জন্য - ওড়ার স্বপ্নের জন্য।’

তার অফুরন্ত উৎসাহ থেকেই কিনে ফেলেছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম নাগরিক হিসাবে চাঁদের বুকে এক টুকরো জমি। তাঁর আগে থেকে চাঁদে জমি আছে একমাত্র শাহরুখ খানের। তবে তা এক অনুরাগী তাঁকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুশান্ত নিজে কিনেছিলেন। সুশান্ত চাঁদের যে অংশটি কিনেছিল তাকে মেয়ার মাস্কোভিয়েন্স বলা হয়েছিল। সুশান্ত চাঁদের সেই অংশটি নিজের নামে আন্তর্জাতিক চুনার ল্যান্ডস রেজিস্ট্রি থেকে কিনেছিলেন। চাঁদে জমি কিনার জন্য তিনি কয়েক হাজার কোটি রুপি খরচ করেছিলেন।






অপূর্ণ ইচ্ছাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিলো অন্তত একশো বাচ্চাদের ইসরো বা নাসায় তালিম নিতে পাঠানো, তাদের মহাকাশের ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলার জন্য। পরিশেষে বলায় যায়, সুশান্ত সিংহ রাজপুত ছিলেন একজন এমেচার এস্ট্রোনমার। তার এরকম মর্মান্তিক বিয়োগে চিরদিনের মত মহাকাশ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহীরা হারালেন এক নক্ষত্রকে !😔

কোন মন্তব্য নেই

sololos থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.